Advertisement
Guest User

bla.txt

a guest
Jun 20th, 2018
83
0
Never
Not a member of Pastebin yet? Sign Up, it unlocks many cool features!
text 21.01 KB | None | 0 0
  1. (লেখাটা বার্সা গ্রুপের কাজী'র, অসধারান লেখে। অই গ্রুপ থেকে কপি করে দিলাম।)
  2.  
  3. মে, ২০০৯।
  4. আর কয়েকদিন পরেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনাল। বার্সার অপনেন্ট রেইনিং চ্যাম্পিয়ন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। সঙ্গত কারণেই ইংলিশ মিডিয়া আবেগে উদ্বেলিত। এই আবেগের প্রেক্ষিতে নানাবিধ স্ট্যাট বাইরাইতে আরম্ভ করলো। "বার্সা ইংলিশ দলের বিপক্ষে শেষ ৮ ম্যাচের মাত্র একটিতে জিতেছে", "মেসি এখনো কোন ইংলিশ দলের বিপক্ষে গোল করতে পারে নাই", "ইউনাইটেডের আছে পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়, মেসি খেলে গরিব লীগে, মেসি জীবনেও হেডে গোল দিতে পারবে না, ম্যারাডোনার মত হাত দিয়ে বেআইনি গোল ছাড়া আর গোল দিতে ফারিবে না" ইত্যাদি ইত্যাদি।
  5. ফলাফলঃ মেসির ফলস-৯ পজিশনে খেলা, এবং ইউনাইটেডের দুই সেরা সেন্টারব্যাক, যাদের আশপাশ দিয়ে অনেক লাম্বা-লাম্বা প্লেয়াররাও ভাত পায় নাই, তাদের নাকের ডগা দিয়ে হেডে গোল দেয়া।
  6. -----------------------------------
  7. নভেম্বর, ২০১১।
  8. বস মরিনহো আইসাই খাই দিবে বলে দিয়েছেন। ম্যাচের আগেই মাদ্রিদ প্লেয়ারদের নানাবিধ হম্বিতম্বি শোনা গেলো। এরপর আসল ম্যাচ শুরু হইলো। মাদ্রিদের নয়া সাইনিং বেশ ভাংচুর কইরা ড্রিব্লিং করার চেষ্টা করলো। এরপর বার্সার পায়ে বল আসলো। বাকিটা ইতিহাস। ৫-০ এর বেইজ্জতি। মেসি একটা গোলও দেয় নাই, কিন্তু ম্যাচের সেরা প্লেয়ার।
  9. এই বছরের শেষের দিকেই আরেকবার ইউনাইটেডের সাথে মেসির মোলাকাত। আরো একবার ইউনাইটেডের বেইজ্জতি। সেই ম্যাচের ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ? মেসি।
  10. ------------------------------------
  11. মে, ২০১৩।
  12. এসি মিলানের সাথে ফার্স্ট লেগে খেলার পর বার্সার অবস্থা করুণ। ২-০ এ পিছায়ে আছে। মিলানের ডিফেন্স মারাত্মক। খেলার শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই মেসি দুইটা অস্বাভাবিক গোল দিয়ে বসলো। ম্যাচ শেষে সবাই মেসির গুণগান গাইতে থাকলো। নাথিং নিউ।
  13. এরপরের রাউন্ডে পিএসজির সাথে ম্যাচ। মেসি ইঞ্জুরড ছিলো, তারপরেও সেকেন্ড লেগে সেকেন্ড হাফে নামাইতে বাধ্য হইলো ওরে। নামার সাথে সাথেই মেসির ভয়েই পিএসজির অবস্থা কাহিল। অ্যাওয়ে গোলে বার্সা জিতলো। তবে মেসির ফিটনেসের অবস্থা আরো খারাপ হইলো।
  14. সেমিফাইনালে ম্যাচ বায়ার্নের সাথে, বেইজ্জতির চূড়ান্ত হইলো। মেসি আদৌ ফিট না, তারপরেও সেকেন্ড লেগ খেললো দলের স্বার্থে। লাভ হয় নাই, সেভেনাপ অটো। দুই মাস আগেই মেসিরে প্রেইজ করা লোকজন এখন মেসিরে রিবেরি ড্রিবল কইরা ফালায় দিতেসে - সেই ভিডিও শেয়ার দিয়ে মজা নিতে লাগলো। নাথিং নিউ।
  15. -----------------------------------
  16. এপ্রিল, ২০১৪।
  17. অ্যাটলেটিকোর সাথে সেকেন্ড লেগে বার্সা অতি ভয়াবহ খেলা দিলো। মেসি হাই প্রেসের আন্ডারে বলই রাখতে পারলো না। নেইমার লুথা খেলা দিলো। ১-০ তে হাইরা সিএল থেকে আউট। ম্যাচ শেষে স্ট্যাট বাইরাইলোঃ অ্যাটলেটীকোর কীপার আর বার্সার কীপার পিন্টো ছাড়া সবথেকে কম দৌড়াইসে মেসি।
  18. বাজারে নয়া ডায়ালগ আর "অ্যানালিসিস" আরম্ভ হইলোঃ মেসির দিন শ্যাষ।
  19. -----------------------------------
  20. ২০১৪ বিশ্বকাপ।
  21. গ্রুপ স্টেজে মেসি আর্জেন্টিনারে একা টাইনা তুললো। "ধুর কি ইরানের লগে গোল দিসে, ধুর কি বস্নিয়ার লগে গোল দিসে। ইরান কোন দল?" (আইজকাই অবশ্য অনেকে ইরানের ডিফেন্সের ভূয়সী প্রশংসা করতেসে, আইরনির মায়রেবাপ)। রাউন্ড অফ ১৬ আর কোয়ার্টারের বেস্ট প্লেয়ার, বিশেষ করে কোয়ার্টারে বেলজিয়ামরে যেইভাবে একা নাচাইসে, অসাধারণ।
  22. এরপর আসলো সেমিফাইনাল। "সেমিফাইনালে মেসি গোল দেয় নাই, সুতরাং মেসি ফ্লপ"। এরপর আসলো ফাইনাল। "ফাইনালে মেসি ম্যারাডোনার মত দুই গোল দেয় নাই, সুতরাং মেসি কোন প্লেয়ারের কাতারেই পড়ে না। চোকার।"
  23. মেসির অবশ্য এইসব শোনার মত অবস্থা নাই। সে বিশ্বকাপ ফাইনাল হারসে। তীরে আইসা তরী ডুবসে। টাইটানিকের ক্যাপ্টেনের কাছে এইসব অ্যানালিসিস মূল্যহীন।
  24. বাজারে নয়া ডায়ালগঃ "মেসি জাতীয় দলের হয়ে ফ্লপ, বিগ স্টেজে ফ্লপ খায়।"
  25. ----------------------------------
  26. ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ সেমিফাইনাল।
  27. "মেসি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউটে গোল দিতে পারে না, অমুকে অনেকগুলা নকআউট গোল দিসে"। সিটির সাথে মাস্টারক্লাস লেভেলের খেলা দিলেও "গোল দেয় নাই" - এই কথা বইলা এবং "পেনাল্টি মিস করসে" - এই লজিক দিয়ে মেসির খেলাটারে বাতিলের খাতায় ফালানি হইলো। বায়ার্নের সাথে ম্যাচের আগে "বায়ার্ন কি ফাইরবে আবার সেভেনাপ খাওয়ায় দিতে" টাইপ অনেক গুঞ্জন শোনা গেলো। এইদিকে আমরা জানিঃ মেসির দিন শেষ।
  28. ফলাফলঃ বোয়েটাং এর ক্যারিয়ার শেষ করা হইলো একটি ডিগবাজির মাধ্যমে, এবং নয়্যার কোনদিক দিয়ে কি খাইলো সেইটা বুঝতেই পারলো না। ফাইনালে মেসি "গোল দেয় নাই" বইলা অনেকে অনেককিছু বুঝানোর চেষ্টা করতে থাকলো। যেমনঃ "বুফনের বিপক্ষে গোল দিতে পারে নাই" ইত্যাদি ইত্যাদি।
  29. বাজারে নয়া ডায়ালগঃ "সুয়ারেজ আর নেইমার আছিলো বইলাই জিতসে।"
  30. ----------------------------------
  31. ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকা।
  32. আবারো ফাইনালে গিয়ে আর্জেন্টিনা হারলো। আবারো "মেসি কেন সবাইরে কাটায়ে গোল দিতে পারলো না, আমাদের বস হইলে সেইডাই করতো" বইলা "মেসির দিন শেষ" ঘোষণা দেয়া হইলো।
  33. ----------------------------------
  34. ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকা।
  35. মেসি একা আর্জেন্টিনারে টাইনা ফাইনালে তুললো। ভাগ্যের ব্যাপক পরিহাসে সে আবারো ফাইনাল হারলো। এইবার আরো পেনাল্টি মিস করলো। আবেগের চোটে "মাফ চাই, আর খেলুম না, অন্য কাউরে খেলা" বইলা অবসর নিলেও সঙ্গত কারণেই ফেরত আসলো।
  36. ফলাফলঃ "মেসি ফাইনালে পেনাল্টি মিস করসে এইডা লুকানোর জন্যে এই অভিনয়ডা করসে। কিন্তু আমরা এইসব বুঝি, হুহ, ধইরা ফেলসি মাম্মা!!"
  37. ---------------------------------
  38. ২০১৮ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ।
  39. মেসি জুভেন্টাসের সাথে গোল দিয়ে "বুফনের বিপক্ষে গোল দেয় না" এই অভিশাপ (!) ভাংলো। চেলসির বিপক্ষে ৩ গোল দিয়ে তাদের ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা অর্জনও খাই দিলো। কিন্তু আকাম ঘটাইলো রোমা। এক ম্যাচ হারার কারণে পুরা সিজনটাই "বাতিল" হয়ে গেলো।
  40. একা লীগ জিতাইলে কি হইসে, রোমার সাথে বাজে খেলসে। বিগ স্টেজে চোক করে মেসি। হুহ।
  41. =================================
  42. বাস্তবে আসি।
  43. স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে এই এলাকায় অনেক পোস্টই করি। নতুন করে কিছুই বলার নাই। ইকুয়েডরের বিপক্ষে হ্যাট্রিক ফালায়ে দলরে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করানো এবং ডমেস্টীক ডাবল + মীডফিল্ডে খেইলাও গোল্ডেন বুট জেতার জন্যে মেসি কোন "বেস্ট" অ্যাওয়ার্ড জিতবে না। তবে এই শতাব্দির সেরা খেলোয়াড় (!) সাহেব ২০১৩ সালে মাদ্রিদের হয়ে ঘোড়ার আন্ডা জিতে এবং সুইডেনের বিপক্ষে হ্যাট্রিকের কল্যানে ঠিকই মাল-সামানা জিতসিলেন। যদিও বিশ্বকাপে ব্যাপক গার্বেজ ফালান তিনি, তারপরেও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে অনেকগুলা গোল দেয়ার কারণে তিনি ২০১৪ সালেও মাল-সামানা জিতেন, যদিও সেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগে মাদ্রিদের সেমিফাইনাল আর ফাইনালের সেরা প্লেয়ার ছিলো রামোস।
  44. যাই হউক, বিশ্বকাপের মধ্যেও এখন মেসি-রোনালদো চইলা আসছে। বিষয়টা হাস্যকর, কিন্তু আইসাই যখন পড়সে তখন কিছু করার নাই। আবার আসার কারণও আছে, কারণ রোনালদো এইবার দুই ম্যাচ ভালো খেলসে। সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসাবে সে তার প্রধান কাজ গোল করা, সেইটা করতেসে, সুতরাং সবাই এখন মেসির প্রধান কাজ যেইটা, সেইটাই দেখতে চাইতেসে। এখন আমরা জানি যে মেসির প্রধান কাজঃ অপজিশনের ১০ জন + রেফারি + দুই লাইন্সম্যানরে কাটায়ে হ্যাট্রিক ফালানি। এই কাজ মেসি করতে পারে নাই ১ ম্যাচে, তার উপর আবার পেনাল্টি মিস করসে। লে হালুয়া। খাই দে শালারে।
  45. আজকে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মেসি আরেকবার খেলতে নামবে। ৩ ফাইনালে টানা হারার পর একটা দলের ক্যাপ্টেনের উপর কি পরিমাণ প্রেশার থাকতে পারে, চিন্তা করতে চাই না। তবে আন্দাজ করতে পারি।
  46. মেসির সমান, এবং আর্জেন্টিনার সমান প্রেশার নিয়ে পৃথিবীর আর কোন দল খেলে না। আর কোন দলের ৩ ফাইনালের হারের শোধ তোলার দায়বদ্ধতা নাই। আর কোন প্লেয়ারের জাতীয় দলের হয়ে সবকিছু করার পরেও "একটা বিশ্বকাপ জিতে নাই, সব ম্যাচে ম্যারাডোনা যেমনে একা সব করসিলো সেইডি করতে পারে নাই, ডিসগ্রেইস" বইলা সমালোচনার শিকার হওয়া লাগে না।
  47. রোনালদো ২০১৪ তে গ্রুপ স্টেজে বাদ যাওয়ার পরেও পর্তুগালে এই নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য হয় নাই। দলের সবাইরে "ওরা আমার লেভেলের না" বইলা চাকার তলে ফালাইলেও কেউ "লীডারশিপ" নিয়ে প্রশ্ন তুলে নাই। উলটা ওর স্ট্যাচু বানাইসে, এয়ারপোর্টের নাম বদলায় দিসে। স্ট্যাচুটা যদিও বেশ অশ্লীল, তারপরেও, একটা বেপার আছে না?
  48. অন্যদিকে মেসি এইবার যদি গ্রুপ স্টেজে বাদ যায়, তাইলে আর্জেন্টাইন মিডিয়া ওরে ছিঁড়ে ফেলবে। মূর্তি না, কুশপুত্তলিকা বানায়ে আগুন না ধরায়ে দিলেই অবাক হবো। মেসি যদিও দল হারলে "আমার দোষে হারসি" বইলা ক্ষমা চায়, কিন্তু এইডা আবার কেমন লীডার? টিমমেইটদের আগে বাসের তলায় না ফালাইলে কি লীডারশীপ হইলো নাকি? চোকার শালায় কয় কি।
  49.  
  50. হউক, অলরেডি মেসিরে জোর কইরা মাটিতে নামানোর একটা ব্যাপক প্রোপাগান্ডা দেখতেসি। মেসিরে অনেকেই দেখতে পারতো না কোন এক কারণে, বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়ার/ফ্যানবেইজের একটা বড় অংশ (যেই কারণে মাদ্রিদ ফ্যানদের সাথে ইউনাইটেড ফ্যানরা এই বিষয়ে জোট বাধসে এক্সদ)। গ্যারি লিনেকারের সাথে এইটা নিয়ে অনেকেরই তর্ক বাধে রেগুলার টুইটারে/পোস্ট ম্যাচ ডিস্কাশনগুলাতে। আমি একসময় খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতাম, এখন আর দেখি না। চর্বিত চর্বন। লেবু বেশি কচলানো। হোয়াই বদার!
  51.  
  52. হোমিওপ্যাথি জিনিসটা বৈজ্ঞানিকভাবে বোগাস (কেন বোগাস, সেইটা জানতে চাইলে ইউটিউবে একটু খুজাখুজি করলেই হবে, এইখানের আলোচ্য বিষয় ভিন্ন)। তবে আমার ফ্যামিলির অনেকরেই এই জিনিসটা বুঝাইতে পারি নাই। অনেকেই হোমিওপ্যাথি "ওষুধ" খায়, খাওয়ার কারণে তাদের নানাবিধ সমস্যার নাকি উপশমও ঘটে। ছোটকালে তাদের আমি বুঝানোর চেষ্টা করতাম যে "এইটা আসলে কোন ওষুধের কাতারে পড়ে না, এইডি খায়েন না, ডাক্তারের কাছে যান"। কার কথা কে শুনে। "বেশি বুঝো তুমি" বইলা উড়ায়ে দেয়া হইলো।
  53. এখন আমি ইউরোপের সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির ইনফর্ম্যাটিক্স এ মাস্টার্স স্টুডেন্ট, মেশিন লার্নিং মডেল ঘাঁটি, অপ্টিমাইজেশন অ্যালগরিদমস, এআই টেকনিকস এইগুলা নিয়ে পড়াশুনা করি, কিন্তু এরপরেও আমি যদি গিয়া বলি "চাচা, এইডি খায়েন না, আসল ওষুধ কিনেন", আমাকে বলা হবেঃ "এইগুলা তুমি বুঝবা না, সবকিছু পড়াশুনা কইরা জানা যায় না"।
  54. আসলেই সবকিছু পড়াশুনা কইরা, কমনসেন্স দিয়ে বুঝা যায় না।
  55. বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদুর।
Advertisement
Add Comment
Please, Sign In to add comment
Advertisement